
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বলেছেন, তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে অঞ্চল বিনিময় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ক্রেমলিন পরে শীর্ষ সম্মেলনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং বৈঠকের জন্য নির্ধারিত স্থানটিকে ‘যথেষ্ট যৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।
ক্রেমলিনের সহযোগী ইউরি উশাকভ টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রেসিডেন্টগণ নিজেরাই নিঃসন্দেহে ইউক্রেন সংকটের দীর্ঘমেয়াদি শান্তিপূর্ণ সমাধান অর্জনের বিকল্পগুলো নিয়ে আলোচনায় মনোনিবেশ করবেন।’
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, লাখ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
ট্রাম্পের সঙ্গে শীর্ষ সম্মেলনের আগে শুক্রবার পুতিন চীন ও ভারতের নেতাদের সাথে পরামর্শ করেছেন। ট্রাম্প তার ক্ষমতার প্রথম মাসগুলোয় ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন, তবে এর কোনো অগ্রগতি হয়নি।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বহুল প্রত্যাশিত বৈঠকটি আগামী শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে মহান রাজ্য আলাস্কায় অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি এর আগে হোয়াইট হাউসে বলেন, ‘ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়ের উন্নতির জন্য কিছু অঞ্চল বিনিময় করতে হবে। তবে পরবর্তীতে এ সংক্রান্ত আর কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে তিন দফা আলোচনার ফলাফল ফলপ্রসূ হয়নি। শীর্ষ সম্মেলন শান্তি আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়।
রাশিয়ার বোমাবর্ষণ লাখ লাখ মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে এবং পূর্ব ও ইউক্রেনের দক্ষিণের একাংশ ধ্বংস করে দিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও কিয়েভের একাধিক আহ্বান এড়িয়ে গেছেন পুতিন।
তিনি এই পর্যায়ে ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, একটি চুক্তির অগ্রগতির জন্য বৈঠকটি প্রয়োজনীয়।
গত মাসে ইস্তাম্বুলে আলোচনায়, রাশিয়ান আলোচকরা তাদের অগ্রগতি থামানোর জন্য কঠোর আঞ্চলিক দাবির রূপরেখা তুলে ধরেন। কিয়েভকে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন কিছু অঞ্চল থেকে সরে যেতে এবং পশ্চিমা সামরিক সহায়তা ত্যাগ করার আহ্বান জানান।
২০২১ সালের জুনে জেনেভায় জো বাইডেন পুতিনের সাথে দেখা করার পর থেকে আলাস্কা শীর্ষ সম্মেলন হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে প্রথম বৈঠক।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালে জাপানে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে ট্রাম্প ও পুতিন শেষবার একসাথে বসেছিলেন। জানুয়ারি থেকে তারা বেশ কয়েকবার টেলিফোনে কথা বলেছেন।
ক্রেমলিনের উশাকভ বলেছেন, ট্রাম্পকে রাশিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
উশাকভ বলেন, ‘সামনের দিকে তাকিয়ে, আশা করা স্বাভাবিক যে দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে পরবর্তী বৈঠক রাশিয়ার ভূখণ্ডে অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সেখানে আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: