অধিকারপত্র ডটকম
কায়রো, মিশর — ২৪ নভেম্বর ২০২৫
মিশরের রাজধানী কায়রোতে দেশটির গোয়েন্দা প্রধান হাসান রাশাদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস। বৈঠকে হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে এবং এসব হামলা পুরো চুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলছে।
হামাসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তারা যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকলেও ইসরায়েলের “অবিরাম লঙ্ঘন” শান্তি প্রচেষ্টাকে বিপর্যস্ত করছে।
বৈঠকে হামাসের নির্বাসিত গাজা প্রধান খালিল আল-হায়্যা উপস্থিত ছিলেন।
কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য
• হামাস জানায়, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো নথিবদ্ধ করতে এবং তা বন্ধে মধ্যস্থতাকারীদের তত্ত্বাবধানে একটি স্পষ্ট মেকানিজম তৈরির আহ্বান জানানো হয়েছে।
• মিশর, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে।
• হামাস আরও জানায়, গাজার রাফাহ অঞ্চলের টানেলে অবস্থানরত যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে—যা জরুরি সমাধান প্রয়োজন।
ইসরায়েলি হামলায় নতুন করে ২৪ নিহত
বৈঠকের আগের দিন ইসরায়েলি বাহিনীর ধারাবাহিক বিমান হামলায় ঘরবাড়ি, আশ্রয়কেন্দ্র ও যানবাহন লক্ষ্য করে অন্তত ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়, যাদের মধ্যে শিশু রয়েছে।
ইসরায়েল বলে, তারা হামাসের সদস্যদের লক্ষ্যবস্তু করেছে, কিন্তু হামাস এ অভিযোগ “মিথ্যা” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ
আল জাজিরার গাজা সিটি প্রতিনিধি তারেক আবু আজ্জুম জানান—
“ইসরায়েলি আক্রমণের কোনো বিরতি নেই। ‘ইয়েলো লাইন’ অতিক্রম করে বেসামরিক স্থাপনা ধ্বংস করা হচ্ছে। গাজার মানুষ আশঙ্কা করছে বড় আকারে হামলা বাড়তে পারে।”
গাজা মিডিয়া অফিস জানায়—
১০ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ৪৯৭ বার লঙ্ঘন করেছে, যার ফলে ৩৪২ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
যুদ্ধবিরতির দুই ধাপ
ফেজ–১ (চলমান)
• জিম্মি–বন্দি বিনিময়
• মানবিক সহায়তা প্রবেশ
• রাফাহ ক্রসিং খোলা
হামাস জীবিত সব জিম্মি ও অধিকাংশ মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে—বাকী রয়েছে মাত্র তিনজন। ইসরায়েল প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দিয়েছে, তবে সীমান্তে কঠোর নিয়ন্ত্রণ জারি রেখেছে।
ফেজ–২
• গাজায় টেকনোক্র্যাটিক প্রশাসন
• “বোর্ড অব পিস” এর তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীর মোতায়েন
• সীমান্ত সুরক্ষা, পুলিশ প্রশিক্ষণ, গাজা নিরস্ত্রীকরণ
হামাস বলেছে—
“ইসরায়েলি দখলদারি থাকা পর্যন্ত অস্ত্র সমর্পণ নয়।”
হামাসের আহ্বান
হামাস মিডিয়েটর দেশগুলো—মিশর, কাতার, যুক্তরাষ্ট্র—কে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ইসরায়েলের হামলা বন্ধ না হলে যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি ভেঙে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: