অধিকারপত্র ডটকম ১২ ডিসেম্বর ২০২৫।
পাকিস্তানের সামরিক আদালত দেশটির সাবেক গুপ্তচর প্রধান ফয়েজ হামিদকে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘন এবং রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ সহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৪ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছে।
ফয়েজ হামিদ ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (ISI) সংস্থার প্রধান ছিলেন। এই সময়কালে এখন কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ক্ষমতায় ছিলেন।
রাজনৈতিক অবস্থান: তিনি ইমরান খানের একজন কট্টর সমর্থক হিসাবে পরিচিত ছিলেন। ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি অবসর নেন।
* গুরুত্ব: এটি পাকিস্তানে একজন আইএসআই প্রধানের প্রথম সামরিক আদালতে বিচার (court martial)।
* আপিল: তার আইনজীবী জানিয়েছেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করছেন। আইএসআই প্রধানের পদকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় ক্ষমতাধর অবস্থান হিসেবে দেখা হয়।
মামলার বিস্তারিত
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর জনসংযোগ শাখা (ISPR) কর্তৃক প্রকাশিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ১৫ মাস ধরে চলা সামরিক আদালতের প্রক্রিয়াটি গত ১২ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টের অধীনে শুরু হয়েছিল।
হামিদকে চারটি অভিযোগে বিচার করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
১. রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা,
২. অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট (Official Secrets Act) লঙ্ঘন করা যা রাষ্ট্রের স্বার্থের ক্ষতি করেছে,
৩. তার ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সরকারি সম্পদের অপব্যবহার, এবং
৪. নাগরিকদের ক্ষতি সাধন করা।
আইএসপিআর বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছে যে হামিদকে "তার পছন্দের প্রতিরক্ষা দল রাখার অধিকার" দেওয়া হয়েছিল এবং "উপযুক্ত ফোরামে" এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার অধিকার রয়েছে, যা হবে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট।
এই মামলার সুনির্দিষ্ট বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি, কারণ শুনানি সামরিক আদালতে রুদ্ধদ্বার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টিতে হামিদের কথিত সম্পৃক্ততার বিষয়টি আলাদাভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি ২০২৩ সালের ৯ মে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে হামিদের জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পর্কিত হতে পারে।
আইনজীবীর প্রতিক্রিয়া
হামিদের আইনজীবী মিয়াঁ আলী আশফাক বলেছেন, তার মক্কেল "১,০০০% নির্দোষ, তবে এটি আদালতের সিদ্ধান্ত"।
তিনি বিবিসিকে বলেন, "আমরা রায় সম্পর্কে অবগত ছিলাম না এবং আইএসপিআর-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পারি। আমরা এখন সিদ্ধান্তের একটি কপির জন্য সংশ্লিষ্ট ফোরামে আবেদন করছি।"
"এটি পাওয়ার সাথে সাথেই আমরা পর্যালোচনা করব এবং অবিলম্বে আপিলের জন্য একটি পিটিশন দাখিল করব। বর্তমানে আপিলের প্রথম ফোরাম হলো সেনাপ্রধান, তাই আমরা সেটাই করব। আমরা আশাবাদী যে পরবর্তী ফোরামে আমরা আমাদের মামলা উপস্থাপন করে ন্যায়বিচার পাব।"

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: