odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Wednesday, 17th December 2025, ১৭th December ২০২৫

শাহবাগে আগ্রাসনবিরোধী পদযাত্রা শেষে এনসিপির আহ্বায়কের কড়া বক্তব্য

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১৬ December ২০২৫ ২৩:৩৪

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১৬ December ২০২৫ ২৩:৩৪

বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম

ভোটের রাজনীতি ও জাতীয় রাজনীতিতে ধর্মের নামে ভোট চাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ কিংবা ইসলামের নামে দেশকে বিভক্ত করার যে রাজনীতি চলছে, তা বন্ধ করে একটি নতুন, ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শাহবাগে আয়োজিত ‘আগ্রাসনবিরোধী পদযাত্রা’–পরবর্তী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশ ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশ। এখানে আওয়ামী লীগ ও ভারতের স্বার্থ রক্ষা করা কিছু গোষ্ঠী বাদে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দলই মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার কথা বলে রাজনীতি করে। ফলে যেমন মুক্তিযুদ্ধের নামে দেশ বিভাজন করা যাবে না, তেমনি ইসলামের নামেও দেশ বিভাজন করা যাবে না।”

তিনি আরও বলেন, গত ৫৪ বছরে মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে যে রাজনীতি হয়েছে, সেখান থেকে বেরিয়ে এসে নতুন বাংলাদেশের রাজনীতি গড়তে হবে। “ইসলামও আমার, মুক্তিযুদ্ধও আমার, জুলাইও আমার—এগুলো একে অপরের অবিচ্ছেদ্য অংশ। যারা এগুলোকে আলাদা করতে চায়, তারাই ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়।”

এনসিপি আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আজ ১৬ ডিসেম্বর আমরা আগ্রাসনবিরোধী পদযাত্রা করেছি। ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বরও এমন কর্মসূচি হয়েছিল। একাত্তর থেকেই এই লড়াই শুরু হয়েছিল—মেজর জলিল, মওলানা ভাসানীরা সেই লড়াইয়ের পথ দেখিয়েছিলেন। আমরা সেই চেতনাকেই ধারণ করি।”

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীন ভূখণ্ড অর্জিত হলেও পূর্ণ সার্বভৌমত্ব এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। প্রতিবেশী একটি দেশ বারবার তাঁবেদারি রাষ্ট্র ও সরকার কায়েমের চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

পদযাত্রার সম্মুখসারিতে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, আবুল হাশিম ও যোগেন মণ্ডলের ছবি বহনের বিষয়টি উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, এই পাঁচ নেতার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষাই এনসিপির পথচলার অনুপ্রেরণা।

 এই মুহূর্তে দুই কর্তব্য

সমাবেশে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর গুলির ঘটনাকে গণ-অভ্যুত্থান ও রাষ্ট্রের ওপর আঘাত হিসেবে উল্লেখ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “আমাদের নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদেরই নিশ্চিত করতে হবে। জনগণ ছাড়া আমাদের আর কোনো নিরাপত্তা বাহিনী নেই।” তবে এখনো সরকারের ওপর আস্থা রাখার কথা জানিয়ে দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।

 মোদির বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের বিজয় দিবসকে ‘ভারতের বিজয় দিবস’ হিসেবে উল্লেখ করে ইতিহাস বিকৃত করেছেন। তিনি অবিলম্বে এ বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানান।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, জাতীয় ছাত্রশক্তির সভাপতি জাহিদ আহসান ও জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: