ডিনদের পদত্যাগ দাবিতে রাকসুর কর্মসূচি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছয়টি অনুষদের আওয়ামী লীগপন্থী ডিনদের পদত্যাগের দাবিতে ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচি পালন করেছেন রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার। ডিনদের উদ্দেশে প্রস্তুত করা পদত্যাগপত্র হাতে নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে একে একে তাঁদের ফোন করেন তিনি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের খোঁজ করেন।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে রাকসু ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করেন রাকসুর জিএস।
📄 যেসব ডিনের পদত্যাগ দাবি
আম্মারের প্রকাশ করা পদত্যাগপত্রে যাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়, তাঁরা হলেন—
- আইন অনুষদের ডিন আবু নাসের মো. ওয়াহিদ
- বিজ্ঞান অনুষদের ডিন নাসিমা আখতার
- ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন এ এস এম কামরুজ্জামান
- সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এস এম একরাম উল্লাহ
- প্রকৌশল অনুষদের ডিন বিমল কুমার প্রামাণিক
- ভূবিজ্ঞান অনুষদের ডিন এ এইচ এম সেলিম রেজা
রাকসু ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ডিনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন না। ফোনে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা আর এই দায়িত্বে থাকতে আগ্রহী নন।
⚖️ পদত্যাগপত্রে যেসব অভিযোগ
উপাচার্য বরাবর লেখা পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করা হয়, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান ও পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় ডিনদের ভূমিকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। ওই সময় তাঁদের কিছু সিদ্ধান্ত, বক্তব্য ও অবস্থান শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, অধিকার ও স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল বলে অভিযোগ করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেও পত্রে উল্লেখ রয়েছে।
পদত্যাগপত্রে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক স্বার্থ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা স্বেচ্ছায় ডিনের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
🔍 বিভাগে বিভাগে শিক্ষকদের খোঁজ
ডিনদের ফোন দেওয়ার পর সালাহউদ্দিন আম্মার আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের খুঁজতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে যান। তিনি ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগে গিয়ে সাবেক উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার ও সাবেক সহ–উপাচার্য মো. সুলতান–উল–ইসলামকে খোঁজেন। পরে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে সহকারী অধ্যাপক এন এ এম ফয়সাল আহমেদকে খুঁজতে যান।
আম্মার বলেন,
“ছয়জন ডিন সম্মিলিতভাবে প্রশাসনকে জানিয়েছেন যে তাঁরা দায়িত্ব পালনে অক্ষম। শিক্ষার্থীদের দুটি স্পষ্ট দাবি—এক, তাঁদের পদত্যাগ; দুই, বিচারকার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে তাঁদের বিরত রাখা।”
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা তালা দেওয়ার সংস্কৃতি চান না। দ্রুত নতুন ডিন নিয়োগ দিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করার দাবি জানান তিনি।
🏛️ প্রশাসনের অবস্থান
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১২টি অনুষদের মধ্যে ছয়টিতে আওয়ামী লীগপন্থী হলুদ প্যানেলের প্রার্থীরা ডিন নির্বাচিত হন। তাঁদের মেয়াদ শেষ হলেও বিধি অনুযায়ী নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রকাশ্য ঘোষণা ও হুমকির কারণে অনেক শিক্ষক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
🔴 ছয় ডিনের পদত্যাগপত্র হাতে এনে কল, বিভাগে বিভাগে শিক্ষকদের খুঁজলেন রাকসুর জিএস আম্মার
#রাজশাহী_বিশ্ববিদ্যালয়
#রাকসু
#সালাহউদ্দিন_আম্মার
#ডিনদের_পদত্যাগ
#ক্যাম্পাস_রাজনীতি
#RUCampus
#StudentMovement
#OdhikarPatra

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: