12/11/2025 মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: গৃহকর্মী আয়েশার স্বামীর চাঞ্চল্যকর তথ্য, চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ায় হত্যাকাণ্ড বলে দাবি |
odhikarpatra
১০ December ২০২৫ ১৮:৩১
প্রতিবেদন তারিখ | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ |
| রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঞ্চল্যকর মা-মেয়ে হত্যা মামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া গৃহকর্মী আয়েশার স্বামী রবিউল ইসলাম চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তার দাবি, কিছু জিনিস চুরি করার উদ্দেশ্যে গিয়ে গৃহকর্ত্রী লায়লা আফরোজের (৪৮) হাতে ধরা পড়ে যান আয়েশা।
সেই আতঙ্কেই আয়েশা দু'জনকেই হত্যা করেন বলে জানান তিনি।
আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুরে ঝালকাঠির নলছিটির কয়ারচর গ্রাম থেকে গৃহকর্মী আয়েশা ও তার স্বামী রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা–পুলিশ। মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে নয় সদস্যের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে।
স্বামীর বক্তব্য:
গ্রেপ্তারের পর রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “সে (আয়েশা) ভাবছিল কিছু জিনিস চুরি করে আমারে দিব। গৃহকর্ত্রী পেছন থেকে ধরে ফেলার পরই সে চাকু দিয়ে কোপাতে থাকে। যতক্ষণ ধরে রাখছে, ততক্ষণ সে কোপ দিতেছে। এরপর তার মেয়ে আসলে তাকেও মারছে।”
পুলিশের তদন্ত ও আলামত:
পুলিশ জানায়, নিহত লায়লা আফরোজ ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যার মাত্র চার দিন আগে আয়েশা শাহজাহান রোডের ১৪ তলা ভবনের সাততলায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেন। নিজেকে তিনি ‘আয়েশা’ নামে পরিচয় দেন।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ দেখে, সোমবার (তারিখ উল্লেখ নেই) সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে আয়েশা বোরকা পরে বাড়িতে প্রবেশ করেন। এরপর মাত্র দেড় ঘণ্টা পর সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে নাফিসার স্কুল–ড্রেস ও মাস্ক পরে ভবন থেকে বেরিয়ে যান। এই দৃশ্য সিসিটিভিতে স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে।
পুলিশের ধারণা, গৃহকর্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা দেখে ফেলার কারণেই নাফিসাকেও একই অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়। মাকে মৃত অবস্থায় দেখে নাফিসা ইন্টারকমে ফোন দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তেই তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয় এবং ধস্তাধস্তির সময় ইন্টারকমের লাইন খুলে যায়।
তল্লাশির পর বাথরুম থেকে একটি সুইচ–গিয়ার ছুরি ও একটি ফল কাটার ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ মনে করছে, এই অস্ত্রগুলো দিয়েই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে।
ঘটনার সময় নাফিসার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম (উত্তরার সানবীমস স্কুলের শিক্ষক) বাসায় ছিলেন না। তিনি সকাল ৭টার দিকে কাজে বের হন এবং সাড়ে ১১টার দিকে বাসায় ফিরে স্ত্রী ও মেয়ের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। এ ঘটনায় তিনি গৃহকর্মী আয়েশাকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় ভবনের দারোয়ান মালেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। হত্যার প্রকৃত উদ্দেশ্য এবং পেছনের কারণ জানতে আয়েশাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।