12/14/2025 পলাশীর ছায়া ও ঔপনিবেশিক ভূত : যে অদ্ভুত বাস্তবতা এখনো আমাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলে
Dr Mahbub
১৩ December ২০২৫ ২১:১৭
পলাশীর যুদ্ধ থেকে শুরু করে দ্বৈত শাসন ও চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত—ঔপনিবেশিক শাসনের এই ভূত আজও আমাদের প্রশাসন, শিক্ষা ও সমাজে দায়হীন ক্ষমতার রূপে বেঁচে আছে। ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত উপনিবেশিক শোষণের যে কাঠামো তৈরি হয়েছিল, তার প্রেতছায়া আজও আমাদের অর্থনীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্যে বর্তমান।
একদিন ধলেশ্বরীর ধারে দাঁড়িয়ে বাংলা যেন দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকেই প্রশ্ন করেছিল— “আমি কি এখনও সেই সোনার বাংলা, নাকি অন্য কারও আয়নায় দেখা এক ভুল প্রতিচ্ছবি?”
—না, এ কোনো দার্শনিক প্রবন্ধ নয়। এ স্রেফ এক মনখারাপ করা সত্যকে রম্যতার মোড়কে বলার প্রয়াস। ইতিহাস বইয়ের সেই দুই সংখ্যা—‘সাতান্ন’ আর ‘সাতচল্লিশ’—এই দুইয়ের মাঝখানে লুকিয়ে আছে এক দীর্ঘ, বিরক্তিকর ছায়াযুদ্ধ। বন্দুক, দলিল আর কালির কলম—এই তিন অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এক বণিক শক্তি বাংলায় পা রেখেছিল। তারা এসেছিল হিসাবের খাতা হাতে; চলে যাওয়ার সময় সেই খাতার পাতাই হয়ে উঠেছিল শাসনের সংবিধান।
ধলেশ্বরীর পাড়ে দাড়িয়ে নিজেকে আরো একটি প্রশ্ন করেছিল—“আমি কি স্বাধীন, নাকি স্বাধীনতার অভিনয়ে অভ্যস্ত এক সত্ত্বা?”
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আমাদের ফিরে তাকাতে হয় ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭–এর সেই দীর্ঘ ঔপনিবেশিক ছায়াযুদ্ধের দিকে—যেখানে বন্দুক, দলিল আর কলমের সমন্বয়ে এক বণিক শক্তি ধীরে ধীরে একটি সভ্য ভূখণ্ডকে শাসনের পরীক্ষাগারে পরিণত করেছিল।
এই প্রশ্নটি নিছক আবেগের নয়; এটি ইতিহাসের দীর্ঘ ছায়া থেকে উঠে আসা এক নির্মম বাস্তবতার প্রতিধ্বনি। কারণ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটেছিল ঠিকই, কিন্তু তার রেখে যাওয়া প্রশাসনিক কাঠামো, ক্ষমতার চর্চা, ভূমির সম্পর্ক ও শিক্ষাগত বৈষম্য—এসব কি সত্যিই শেষ হয়েছে?
ইংরেজরা দেশ ছেড়েছে—এ কথা সত্যি। কিন্তু ঔপনিবেশিকতার ভূত কি সত্যিই বিদায় নিয়েছে? নাকি সে আজ নব্য উপনিবেশবাদের পোশাক পরে আমাদের প্রশাসন, অর্থনীতি আর মানসিকতার অলিগলিতে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে?
বিশ্বাস করুন বা না করুন, সেই ১৭৫৭ সালের ভূতটি দিব্যি আরাম করে আমাদের সমাজে টিকে আছে। সে সরকারি দপ্তরে বসে ফাইলে লাল কালির আঁচড় কাটে, শেয়ার বাজারের উত্থান-পতন দেখে নিঃশব্দে হাসে, আর সোশ্যাল মিডিয়ার মন্তব্যের ঘরে বসে বিভেদের বীজ বপন করে। সে আসলে এক 'হাইব্রিড ভূত'—অদ্ভুত, গোঁয়ার এবং চূড়ান্তভাবে দায়হীন।
আসুন, এই ভূতের আদি-অন্ত ও তার অদ্ভুত কার্যকলাপের খতিয়ান নেওয়া যাক।
একটি সুসংগঠিত, সভ্য রাষ্ট্র শাসন শুরু করেছিল কারা? রাজা? সম্রাট? কোনো রাজনৈতিক দল?
না—বাংলার ক্ষেত্রে উত্তরটি ছিল একেবারেই অদ্ভুত: একটি বণিক প্রতিষ্ঠান।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি—নামে বাণিজ্যিক সংস্থা, কাজে ইতিহাসের এক আশ্চর্য ব্যতিক্রম। তারা এসেছিল গোলমরিচ আর নীল কিনতে; কিন্তু দোকান খুলতে এসে পুরো রাজপ্রাসাদটাই দখল করে বসল। যেন কেউ ভাড়াটিয়া সেজে আপনার বাড়িতে ঢুকে বসার ঘরের সোফাতেই নিজের দরবার বসিয়ে দিল।
ইউরোপের উপনিবেশ ছিল প্রায়শই জনমানবহীন বা আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল। কিন্তু বাংলা ছিল ভিন্ন—এখানে ছিল প্রশাসন, কৃষি, আইন আর সংস্কৃতির গভীর শিকড়। তবু এই সভ্য ভূখণ্ডেই জন্ম নিল ইতিহাসের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র। ইতিহাসবিদেরা বলেন, “এ কোনো সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল না।” কিন্তু বাস্তবতা বলে— পরিকল্পনা না থাকলেও লোভ ছিল সীমাহীন।
লন্ডনের কোর্ট অব ডাইরেক্টর্স মুখে বলত, “আমরা রাজ্য চাই না, শুধু ব্যবসা চাই।” অথচ ফোর্ট উইলিয়ামের সাহেবরা যখন বন্দুকের নল, ঘুষ আর ভয়ের সাহায্যে সুবিধা আদায় করত, তখন সেই লন্ডনই নির্লজ্জ সম্মতিতে মাথা নেড়ে দিত।
এই দ্বিচারিতাই জন্ম দিয়েছিল এক চিরাচরিত ভূতের—বেনেবাদের ভূত। নীতি বলে এক কথা, অলিখিত দস্তুর বলে আরেক কথা।আজও আমরা দেখি—ঝুঁকি নেবে কেউ না, কিন্তু ঝুঁকি নিয়ে কেউ সাফল্য আনলে সেই লাভ গ্রহণে সবাই প্রস্তুত।দায় নয়, শুধু সুবিধা—এই দায়মুক্ত লাভই ঔপনিবেশিক মানসিকতার দীর্ঘতম ছায়া।
আসলেই আজকের দিনে এই ভূতটিই এক অদ্ভুত বাস্তবতাকে জন্ম দিয়েছে: আমরা আজও দেখি, নীতির কথা বলা হলেও, পর্দার আড়ালে থাকা ব্যক্তিরা নিয়মের বাইরে গিয়ে দ্রুত ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত লাভ তুলে আনে। আর সেই 'সুবিধাজনক সাফল্য' অর্জিত হলে, দায় এড়ানো উচ্চ কর্তৃপক্ষ তা অবলীলায় গ্রহণ করে নেয়। এই 'দায়মুক্ত লাভ'—অর্থাৎ ঝুঁকি আমার নয়, লাভটা শুধু আমার—আজও আমাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোতে নিঃশ্বাস ফেলে। মনে হয় যেন, সাফল্যের সার্টিফিকেটটা ক্লাইভের হাতেই তৈরি করা।
১৬৫১ সালে বার্ষিক মাত্র তিন হাজার টাকার বিনিময়ে শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের সুবিধা পেয়েছিল কোম্পানি। সুবিধাটি ছিল প্রতিষ্ঠানের জন্য। কিন্তু লোভ যখন নৈতিকতাকে গ্রাস করে, তখন সেই শুল্কছাড় ব্যক্তিগত ব্যবসার হাতিয়ার হয়ে ওঠে।
আজকের ভাষায় ভাবুন—অফিসের কাজে দেওয়া আনলিমিটেড ইন্টারনেট দিয়ে কেউ যদি রাতভর ব্যক্তিগত বিনোদন চালায়, প্রতিবেশীকেও ফ্রি দেয়—এটাই ছিল সেই আদিম দুর্নীতির সংস্কৃতি।
সিরাজউদ্দৌলার কলকাতা আক্রমণ কোনো সামরিক অভিযানমাত্র ছিল না; তা ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে শেষ আর্তনাদ। কিন্তু পলাশীর ধুলোয় সেই আর্তনাদ চাপা পড়ে যায়। বিশ্বাসঘাতকতা আর অর্থলোভের জল পেয়ে যে বিষবৃক্ষ জন্ম নেয়, তার ফল বাংলার মানুষ আজও বহন করছে।
১৭৬৫ সালে দেওয়ানি লাভের মাধ্যমে বাংলার ধানের গোলা তুলে দেওয়া হয় এমন এক শক্তির হাতে, যার ক্ষুধা কখনো মেটে না।আর এই বিশ্বাসঘাতকতা্র ভূত ছলমান রয়েছে। যা যুগে যুগে বাংলাকে আকড়ে ধরেছে। পিছনে টেনে নিতে প্রয়াস চালিয়েছে।
রবার্ট ক্লাইভ যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তবে তিনি কর্পোরেট দুনিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রশিক্ষক হতেন— কীভাবে ক্ষমতা নেবেন, কিন্তু দায় নেবেন না’—এই বিষয়ে।
দ্বৈত শাসন ছিল তাঁর মাস্টারস্ট্রোক। কোম্পানির হাতে রাজস্ব—ক্ষমতা। আর নওয়াবের হাতে আইন-শৃঙ্খলা—দায়িত্ব।
ফলাফল?
ক্ষমতা আছে, দায় নেই। অপরদিকে দায় আছে, ক্ষমতা নেই। মন্বন্তরে কোম্পানি বলল, “ত্রাণ নওয়াবের দায়।” নওয়াব কী করবেন? কোষাগার তো ফাঁকা!
আজও এই ছায়া আমাদের প্রশাসনে দেখা যায়। সিদ্ধান্ত আসে এমন জায়গা থেকে, যেখানে জবাবদিহি নেই। আর মাঠপর্যায়ে যারা কাজ করেন, তাদের কাঁধে সব দায়—ক্ষমতা ছাড়া। ক্লাইভি দর্শন আজও কানে কানে বলে— “সিদ্ধান্ত নাও, কিন্তু সই করো না।”
আজকের আধুনিক আমলাতন্ত্রে বা প্রশাসনে এই 'দায়হীন ক্ষমতার' ভূতটি আজও অদৃশ্য সুতোয় বাঁধা। আমরা প্রায়শই দেখি আমলাতন্ত্রে দুইটি পক্ষ: ১. উচ্চ ক্ষমতাধর পক্ষ এবং মাঠ পর্যায়ের কর্মী। আসেলে বড় সিদ্ধান্তগুলো আসে এমন সব উৎস থেকে, যারা জনগণের কাছে সরাসরি জবাবদিহি করতে বাধ্য নয় (দায়হীন ক্ষমতা)। বড় কোনো বিপর্যয় ঘটলে মূল ক্ষমতাধর পক্ষ দ্রুত জবাবদিহি এড়িয়ে যায়। আর এরাই তথাকথিত উচ্চ ক্ষমতাধর পক্ষ। অন্যদিকে, মাঠ পর্যায়ে থাকা কর্মীদের ওপর থাকে জনগণের সকল প্রত্যাশা পূরণের গুরুদায়িত্ব, কিন্তু তাদের হাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকে সীমিত (দায় আছে, ক্ষমতা নেই)। আর এটি ক্লাইভের সেই কূটনৈতিক চালেরই পুনরাবৃত্তি, যেখানে ক্ষমতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে একটি স্থায়ী দেয়াল তৈরি করা হয়েছিল। এই ভূতটি আমাদের কানে কানে আজও বলে: "ভাই, সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দাও, কিন্তু দায়দায়িত্ব নিও না!"
ঔপনিবেশিক শাসন আরেকটি ভয়ংকর শিক্ষা দিয়ে গেছে—তাৎক্ষণিক বিচার। আইন নয়, প্রক্রিয়া নয়—ক্ষমতাই বিচার। নীলকুঠির লাঠিয়াল, কোম্পানির পোষা পুলিশ—ভয় দেখিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপনই ছিল শাসনের ভাষা।
আজ যখন জনতা আইন হাতে তুলে নেয়, তখন মনে হয়—সেই নীলকুঠির ভূতই আমাদের কানে ফিসফিস করে বলে, “দেরি কেন? বিচার তো স্রেফ একটা লাঠির কাজ!”
ক্লাইভের শুরু করা এই 'দায় ঝেড়ে ফেলার শিল্পকলা' এখনো চলমান। বিষয়টা বাড়ির অন্তরমহলের রান্নাঘরেও বিস্তার করেছে। এক ব্যক্তি রান্নাঘরের সেরা পদগুলো রান্না করে খাবেন (ক্ষমতা), কিন্তু বাসন ধোয়ার কাজটি (দায়িত্ব) চাপাবেন বাড়ির কাজের লোকের ওপর। আর যদি ডিশে কোনো সমস্যা হয়, আপনি হাত ধুয়ে বলবেন, "আমি তো শুধু খাবার বানিয়েছি, বাসন মাজা তো আমার কাজ নয়!" আজকের সমাজে এই ক্লাইভি দ্বৈত শাসন প্রবলভাবে বিদ্যমান। বড় কোনো বিপর্যয় ঘটলে বা আর্থিক কেলেঙ্কারি হলে, মূল ক্ষমতাধর পক্ষটি দ্রুত জবাবদিহি এড়িয়ে যায়। তারা নামেমাত্র কোনো 'নায়েব দীউয়ান'কে সামনে ঠেলে দেয়, যার ক্ষমতা কম, কিন্তু দায়ভার কাঁধে নেওয়ার পাল্লা ভারী।
যুগে যুগে এই বিভেদ তৈরি হয়েছে ক্ষমতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে, যা সাধারণ মানুষকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করে। অপরদিকে আজকের আধুনিক আমলাতন্ত্রে বা প্রশাসনে এই 'দায়হীন ক্ষমতার' ভূতটি আজও অদৃশ্য সুতোয় বাঁধা। আমরা প্রায়শই দেখি: বড় সিদ্ধান্তগুলো আসে এমন সব উৎস থেকে, যারা জনগণের কাছে সরাসরি জবাবদিহি করতে বাধ্য নয়। অন্যদিকে, মাঠ পর্যায়ে থাকা কর্মীদের ওপর থাকে জনগণের সকল প্রত্যাশা পূরণের গুরুদায়িত্ব, কিন্তু তাদের হাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকে সীমিত।
১৭৯৩ সালে লর্ড কর্নওয়ালিস করলেন এক সামাজিক সার্জারি। জমিদার হলেন জমির মালিক। রায়ত হলেন ভূমিহীন প্রজা। যে মাটিতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম চাষ হয়েছে, এক টুকরো কাগজে সই করে সেই মাটির মালিকানা বদলে গেল। এটি শুধু অর্থনৈতিক পরিবর্তন নয়—এ ছিল পরিচয়ের সংকট। এই ব্যবস্থাই জন্ম দিল—চরম অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং একইসাথে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের গভীর বীজ।
মুঘল আমলে শিক্ষা ছিল অধিকার। ব্রিটিশ আমলে শিক্ষা হলো ফিল্টার। ইংরেজি হলো গেটপাস। ম্যাকলের ভাষায়—রক্তে ভারতীয়, চিন্তায় ইংরেজ। ফলাফল—একটি স্থায়ী এলিট শ্রেণী। একইসাথে চাটুকার কেরাণী মার্কা সধ্যবিত্ত শ্রেণী। আজও সেই দেয়াল অটুট। ইংরেজি মাধ্যম যেন ভিআইপি লাউঞ্জ, আর বাকিরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানো যাত্রী।
বইয়ে লেখা আছে—ঔপনিবেশিক যুগ শেষ হয়েছে ১৯৪৭ সালে। কিন্তু তার বাস্তবতা কি শেষ হয়েছে?
প্রশাসন, ভূমি, শিক্ষা, ক্ষমতা—সবখানেই সেই পুরোনো ছায়া। ধলেশ্বরীর ধারে দাঁড়িয়ে বাংলা আজও প্রশ্ন করে— “আমি কি স্বাধীন, নাকি স্বাধীনতার অভিনয়ে অভ্যস্ত?”
১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বাংলা ছিল 'অভূতপূর্ব ঘটনাপ্রবাহের' এক পরীক্ষাগার, যেখানে ক্ষমতা, অর্থনীতি ও সমাজকে একদল বিদেশী বণিক নিজেদের স্বার্থে ঢেলে সাজিয়েছিল। সেই যুগের 'অদ্ভুত বাস্তবতা' হলো: শোষণের জন্য প্রয়োজন ছিল না কোনো সচেতন পরিকল্পনা, শুধু প্রয়োজন ছিল লোভী স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং দুর্বল কাঠামোর ওপর ভরসা করে এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতা।
আজও আমাদের সমাজে সেই ঔপনিবেশিক 'বেনেবাদী' নীতির ভূত রয়ে গেছে। সেই ভূস্বামী-প্রজা সম্পর্ক, সেই দায়বদ্ধতাহীন ক্ষমতার কেন্দ্র, সেই আমলাতান্ত্রিক জটিলতা—সবই যেন আধুনিক আবরণে পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। বাঙালি জাতি স্বাধীনতা লাভ করেছে, কিন্তু ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার হিসেবে পাওয়া অর্থনৈতিক বিভাজন এবং প্রাতিষ্ঠানিক অন্যায় থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি আজও মেলেনি। এই অসমতাই আমাদের সমাজে এখনও সেই 'অদ্ভূত বাস্তবতা' টিকিয়ে রেখেছে।
ইতিহাস পেছনে পড়ে থাকে ঠিকই, কিন্তু তার ছায়া আজও আমাদের বর্তমানের দেয়ালে স্পষ্ট। ঔপনিবেশিক ভূত এখনো যায়নি। সে এখনো কফি খায়, ফাইল চালায়, সিদ্ধান্ত নেয়— আর আমাদের শেখায়, ঝুঁকি নেবে কেউ না, কিন্তু লাভ চাই সবাই।
- অধ্যাপক ড. মাহবুব লিটু, উপদেষ্টা সম্পাদক, আমাদের অধিকারপত্র (odhikarpatranews@gmail.com)
# BanglaFolkSong #পলাশীরছায়া #ঔপনিবেশিকইতিহাস #পলাশীরযুদ্ধ #ইস্টইন্ডিয়াকোম্পানি #দ্বৈতশাসন #চিরস্থায়ীবন্দোবস্ত #উপনিবেশিকউত্তরাধিকার #বাংলারইতিহাস #ঔপনিবেশিকমানসিকতা #দায়হীনক্ষমতা #শিক্ষাবৈষম্য #সামাজিকবিভাজন #ColonialLegacy #BattleOfPlassey #BritishColonialism #EastIndiaCompany #DualGovernance #PermanentSettlement #ColonialMindset #PostColonialSociety #HistoricalAnalysis #BanglaHistory