
গাজা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সমালোচনার জেরে জাতিসংঘের এক বিশেষজ্ঞের ওপর ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা আরোপকে ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সভাপতি।
জেনেভা থেকে এএফপি জানায়, পরিষদের সভাপতি ও সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ইউর্গ লাউবার বলেন, ‘ফ্রানচেসকা আলবানিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় আমি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সিদ্ধান্তে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
এর আগের দিন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ঘোষণা দেন যে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রানচেসকা আলবানিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়, তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন।
পরবর্তী এক বিবৃতিতে রুবিও অভিযোগ করেন, আলবানিজ ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়ার সুপারিশ করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন।
রুবিও দাবি করেন, ‘তিনি নির্লজ্জভাবে ইহুদি বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করেছেন। আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বকে যারা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক হাতিয় অস্ত্রায়ণ করে হুমকির মুখে ফেলতে চায়, তাদের সহ্য করা হবে না।’
তবে নিষেধাজ্ঞার ধরন বা পরিধি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
এর আগে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির চারজন বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার অংশ হিসেবে। এতে বিচারকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ হয় এবং দেশটিতে তাদের সম্পদ বা স্বার্থও জব্দ হয়।
ইতালীয় বংশোদ্ভূত এই বিশেষজ্ঞ জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত হলেও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে কথা বলেন না। তবে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তিনি দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার।
সম্প্রতি তিনি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহু কোম্পানির নাম উল্লেখ করে বলা হয়—তারা দখল, বর্ণবৈষম্য ও গণহত্যার অর্থনীতিতে লাভবান হচ্ছে।
এই প্রতিবেদনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় ইসরায়েল। নাম উল্লেখিত কয়েকটি কোম্পানিও আপত্তি তোলে।
ইসরায়েলের জাতিসংঘ দূত ড্যানি ড্যানন বলেন, ‘আলবানিজ জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুণ্ন করেছেন। তিনি বাস্তবতা উপেক্ষা করে ভুয়া বয়ান ও অবৈধ আইনি পদক্ষেপকে উসকে দিচ্ছেন।’
মানবাধিকার পরিষদ সভাপতি ইউর্গ লাউবার বলেন, ‘বিশেষ প্রতিবেদনকারীরা বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সুরক্ষায় পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। আমি জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেন বিশেষ প্রতিবেদনকারীদের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করে এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো ভয়ভীতি বা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ না নেয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: