odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২

পরিবেশ রক্ষায় দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় নিষিদ্ধ হচ্ছে মাছ আকৃতির প্লাস্টিকের ছোট সয়া সসের বোতল

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:০৫

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:০৫

বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় মাছ আকৃতির ছোট সয়া সস কনটেইনার আর ব্যবহার করা যাবে না দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায়। সোমবার (১লা সেপ্টেম্বর ২০২৫) থেকে রাজ্যটিতে এসব কনটেইনারের বিক্রি ও বিতরণ নিষিদ্ধ হচ্ছে। রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী ও উপ-প্রিমিয়ার সুসান ক্লোজ বলেন, প্রতিটি মাছ আকৃতির কনটেইনার কয়েক সেকেন্ডের জন্য ব্যবহার হয়, অথচ পরিবেশে থেকে যায় কয়েক দশক বা শতাব্দী ধরে।

পরিবেশ রক্ষায় নতুন আইন:

২০২৩ সালে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া একক-ব্যবহৃত প্লাস্টিক কমাতে আইন পাশ করে। এর আওতায় সুপারমার্কেট ব্যাগ, প্লাস্টিক স্ট্র, ড্রিংক স্টিরার, কটন বাড, কনফেটি নিষিদ্ধ হয়েছিল। এবার সেই আইন আরও বিস্তৃত করে মাছ আকৃতির সয় সস কনটেইনারকে তালিকাভুক্ত করা হলো।

সরকার জানিয়েছে, এ নীতির লক্ষ্য হলো-

  • দূষণ কমানো
  • কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করা
  • সামুদ্রিক প্রাণ বাঁচানো

কেন নিষিদ্ধ হলো?

যদিও এসব কনটেইনার পুনর্ব্যবহারযোগ্য পলিথিন দিয়ে তৈরি, কিন্তু আকারে ছোট হওয়ায় রিসাইক্লিং মেশিনে ধরা পড়ে না। ফলে সেগুলো প্রক্রিয়াজাত না হয়ে সরাসরি পরিবেশে থেকে যায় এবং শেষ পর্যন্ত মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়। এর আগে রাজ্যে সুপারমার্কেটের প্লাস্টিক ব্যাগ, স্ট্র, কটন বাড, কনফেটি ও স্টিরারের ব্যবহারও বন্ধ করা হয়েছে। সরকার বলছে, এ পদক্ষেপগুলো দূষণ কমানো, কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ ও সামুদ্রিক জীব রক্ষার জন্য জরুরি।

ইতিহাস ও ব্যবহার

জাপানের তেরুও ওয়াতানাবে ১৯৫৪ সালে মাছ আকৃতির এই কনটেইনার উদ্ভাবন করেন। প্রথমে সেগুলো সিরামিক বা কাঁচ দিয়ে বানানো হতো। পরে প্লাস্টিক সংস্করণ বাজারে এলে দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষ করে টেকআওয়ে সুশির সঙ্গে।

কী নিষিদ্ধ, কী নয়

  • নিষিদ্ধ: ৩০ মিলিলিটারের মধ্যে পূর্বভর্তি (pre-filled) সয় সস কনটেইনার, যার সাথে ঢাকনা, ক্যাপ বা স্টপার রয়েছে।
  • অব্যাহতি: বড় সয় সস বোতল এবং স্যাশে (sachet) আগের মতোই ব্যবহার করা যাবে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট

সরকারি কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তবে ২০৪০ সালের মধ্যে সমুদ্রে প্লাস্টিক প্রবাহ বছরে তিনগুণ বেড়ে ২৯ মিলিয়ন টন ছাড়িয়ে যাবে। একটি বৈশ্বিক জরিপে প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টায় ২৫ দেশের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া সপ্তম স্থানে রয়েছে।

মাছের আকৃতির সয়া সস বোতল এক সময়ে ছিল খাবারের সঙ্গে মজার এক সংযোজন, কিন্তু পরিবেশের জন্য এর ক্ষতি এখন চোখে আঙুল দিয়ে দেখা যাচ্ছে। কয়েক সেকেন্ডের সুবিধা যদি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দীর্ঘমেয়াদী বিপর্যয় ডেকে আনে, তবে তা আর গ্রহণযোগ্য নয়। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার এ সিদ্ধান্ত দেখিয়ে দিল—পরিবেশ রক্ষায় জনপ্রিয়তাও বিসর্জন দিতে হয়। এখন প্রশ্ন, এ উদ্যোগ কি অন্যান্য দেশেও অনুপ্রেরণা জোগাবে?

মো. সাইদুর রহমান বাবু, স্পেশাল করোসপন্ডেন্টস, অধিকারপত্র

 

 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: