
ঢাকা:
বাংলাদেশের প্রখ্যাত লেখক, গবেষক ও বামপন্থি রাজনৈতিক নেতা বদরুদ্দীন উমর ইন্তেকাল করেছেন। আজ রোববার (৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজুল হাকিম তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত এক মাস ধরে তিনি নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন এবং কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় জাতীয় শহীদ মিনারে অথবা নির্ধারিত অন্য কোনো স্থানে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তাঁর মরদেহ রাখা হবে। জানাজা শেষে তাঁকে রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে তাঁর বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে।
বদরুদ্দীন উমর রেখে গেছেন স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েকে। তাঁর বড় মেয়ে বর্তমানে লন্ডনে আছেন এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে। ছোট মেয়ে সারা আখতার বাবার সেবাযত্নে সবসময় পাশে ছিলেন।
সংক্ষিপ্ত জীবন পরিচিতি
১৯৩১ সালে জন্মগ্রহণ করা বদরুদ্দীন উমর ১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পলিটিক্স, ফিলসফি অ্যান্ড ইকোনমিক্স (পিপিই) বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। ১৯৬৮ সালে সামরিক শাসক মোনায়েম খানের একনায়কতন্ত্রের প্রতিবাদে শিক্ষকতা ছেড়ে পুরোপুরি লেখালেখি ও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন।
তাঁর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ “পূর্ব বাংলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি” বাংলা ভাষা আন্দোলন ও রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অমূল্য দলিল হিসেবে স্বীকৃত। তিনি কমিউনিস্ট পার্টি, কৃষক সমিতি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটসহ একাধিক সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০০৩ সালে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন।
বাংলাদেশের প্রগতিশীল আন্দোলনে বদরুদ্দীন উমরের অবদান ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: