odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 12th December 2025, ১২th December ২০২৫

রাজশাহীর তানোরে নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদ আর নেই: ৩২ ঘণ্টার অভিযান শেষে মৃত ঘোষণা, অরক্ষিত গর্ত নিয়ে ক্ষোভ

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১১ December ২০২৫ ২২:৩৭

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১১ December ২০২৫ ২২:৩৭

পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট: অধিকারপত্র ডটকম 

রাজশাহীর তানোরে নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদ আর নেই: ৩২ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান ব্যর্থ
রাজশাহী, বাংলাদেশ: রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের অরক্ষিত গর্তে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদকে (নাম পরিবর্তিত) ৩২ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের পর অবশেষে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।


হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে সাজিদকে হাসপাতালে আনা হলেও তার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স এর পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন, রাত ৯টায় শিশুটিকে গর্ত থেকে উদ্ধার করা হয়।
মর্মন্তিক দুর্ঘটনার সূত্রপাত:
বুধবার দুপুরে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট গ্রামে নলকূপের এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। জানা যায়, সাজিদ তার মা ও ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ির পাশের একটি জমি পার হচ্ছিল। জমিটি খড় দিয়ে ঢাকা ছিল, যার নিচে অরক্ষিত গভীর নলকূপের গর্তের উপস্থিতি সাজিদের মা জানতেন না। হাঁটার সময় সাজিদ হঠাৎ গর্তে পড়ে যায়। পেছনের দিক থেকে ‘মা মা’ চিৎকার শুনে মা ফিরে দেখেন সাজিদ নেই। খড় সরাতেই বেরিয়ে আসে ১২০ ফুট গভীর 'মৃত্যুকূপ'।

 অরক্ষিত গর্ত: স্থানীয়দের অভিযোগ: স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত বছর স্থানীয় এক ব্যক্তি গভীর নলকূপ স্থাপনের চেষ্টা করে পানি না পাওয়ায় পাইপটি পরিত্যক্ত অবস্থায় মুখ খোলা রেখে ফেলে যান। গত বছরের বৃষ্টিতে গর্তের মুখ আরও বড় হয়।

কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা বা ঢাকনা না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অভিযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযানের শেষ মুহূর্ত:
দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে হাজারো উৎসুক জনতা ভিড় করে। সন্তানের আশায় সাজিদের মা গর্তের পাশেই নির্ঘুম রাত কাটান, বিরামহীন কান্না আর দোয়া চলতে থাকে। প্রথমদিকে শিশুটির সাড়াশব্দ পাওয়া গেলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেতর থেকে আওয়াজ আসা বন্ধ হয়ে যায়, যা উদ্ধারকর্মীদের শঙ্কিত করে তুলেছিল।

তবে ফায়ার সার্ভিস ক্রমাগত গর্তের ভেতরে অক্সিজেন সরবরাহ অব্যাহত রেখেছিল। মেডিকেল টিম ও স্থানীয় প্রশাসনও সারাক্ষণ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল।


এর আগে সন্ধ্যায় লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছিলেন, শিশুটির বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবুও জীবিত বা মৃত যে অবস্থাতেই হোক, শিশুটিকে উদ্ধার না করা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন তিনি। কিন্তু সমস্ত প্রার্থনা ও প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ৩২ ঘণ্টা পর শিশুটিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: