অধিকারপত্র ডটকম
বিশেষ প্রতিবেদক
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ঢাকা:
কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে প্রথমে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে আটকে রাখা এবং পরের দিন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।
আজ সোমবার এক বিবৃতিতে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের এই সংগঠনটির সভাপতি নূরুল কবীর ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ এই নিন্দা জানান। বিবৃতিতে পরিষদ বলেছে, এ ধরনের আচরণ অতীতের স্বৈরাচারী শাসনামলে সাংবাদিকদের প্রতি রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের দুঃখজনক স্মৃতিকে উসকে দেয়।
গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে আনিস আলমগীর গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন যে তাঁকে ধানমন্ডি এলাকার একটি জিম (ব্যায়ামাগার) থেকে রাত আটটার দিকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে বলা হয়েছিল, ডিবিপ্রধান তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন।
তবে আজ বেলা ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে ডিবিপ্রধান মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা একটি মামলায় সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরে জানা যায়, ‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামের একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ গতকাল রাত দুইটার দিকে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি দায়ের করেন। এই মামলায় সাংবাদিক আনিস আলমগীর, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ১৪ ডিসেম্বর কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। তাঁকে সেখানে আটকে রেখে পরদিন তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয় এবং গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সংগঠনটি জানায়, এ ধরনের চর্চা তারা অতীতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও দেখেছে, যখন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হয়রানি ও নির্বিচার গ্রেপ্তার ছিল নিয়মিত ঘটনা।
বর্তমান ঘটনাটি সেই দুঃখজনক বাস্তবতারই পুনরাবৃত্তি।
বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদ স্পষ্ট করে বলেছে যে, কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তবে তা অবশ্যই প্রচলিত আইন ও ন্যায়বিচারসম্মত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে। অভিযোগ ছাড়াই ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া, আটকে রাখা কিংবা পরে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
এছাড়া, সম্পাদক পরিষদ আরও জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে বহু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা করা হয়েছে এবং অনেকেই এখনো কারাগারে রয়েছেন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে আইন উপদেষ্টা এসব মিথ্যা মামলা ও হয়রানির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু এখনো মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয়নি
সম্পাদক পরিষদ এ ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং সব ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছে।
ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহার মেহের আফরোজ শাওন আনিস আলমগীর সম্পাদক পরিষদ নিন্দা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা ডিবি কার্যালয়

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: