odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Thursday, 18th December 2025, ১৮th December ২০২৫

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ের ৮০ বছর: যুক্তরাজ্যে চার দিনের স্মরণ অনুষ্ঠান শুরু

odhikarpatra | প্রকাশিত: ৫ May ২০২৫ ২০:১২

odhikarpatra
প্রকাশিত: ৫ May ২০২৫ ২০:১২

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের ৮০ বছর স্মরণে সোমবার থেকে যুক্তরাজ্যে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কয়ারে উইনস্টন চার্চিলের ১৯৪৫ সালের বিজয় ভাষণের পুনঃপ্রচার এবং রাজপরিবারের ঐতিহ্যবাহী ব্যালকনি উপস্থিতির মাধ্যমে এই উৎসবের সূচনা হয়।

লন্ডন থেকে এএফপি জানায়, রাজা তৃতীয় চার্লস, প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার এবং হাজারো দর্শক একটি সামরিক কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন। এতে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি এবং অল্পসংখ্যক ইউক্রেনীয় সেনাও অংশ নেন। অভিনেতা টিমোথি স্পল চার্চিলের ভাষণ পাঠ করেন: ‘সহিংসতা ও স্বেচ্ছাচারের কাছে নত হয়ো না, প্রয়োজনে মৃত্যুবরণ করো, তবু পরাভব মেনো না।’

ইতালির পার্লামেন্টে দেওয়া এক বক্তব্যে রাজা চার্লস বলেন, ইউরোপজুড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয় দিবস (৮ মে) উদ্যাপনের প্রাক্কালে ইউক্রেন যুদ্ধ আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে, ‘শান্তিকে কখনোই স্থায়ী ধরে নেওয়া যায় না।’

বিবিধ ঐতিহাসিক ও আধুনিক ২৩টি সামরিক উড়োজাহাজের মহড়ার মধ্য দিয়ে সোমবারের কুচকাওয়াজ শেষ হয়, যা রাজা ও রাজপরিবার বাকিংহাম প্যালেসের ব্যালকনি থেকে প্রত্যক্ষ করেন। ঠিক এখান থেকেই ১৯৪৫ সালের ৮ মে রাজা ষষ্ঠ জর্জ, রানি এলিজাবেথ, তাঁদের দুই কন্যা এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী চার্চিল জনতার অভ্যর্থনা গ্রহণ করেছিলেন।

তৎকালীন রাজকন্যা এলিজাবেথ (পরে রানি) ও মার্গারেট ওই রাতে সাধারণ মানুষের ভিড়ে গোপনে যোগ দেন, যা পরবর্তী সময়ে এলিজাবেথ তাঁর জীবনের অন্যতম স্মরণীয় রাত হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।

‘শেষ প্রজন্মের’ জন্য শেষ স্মরণ

বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারই সম্ভবত এমন শেষ বড় আয়োজন, যেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেওয়া জীবিত কোনো সেনা উপস্থিত থাকবেন। বাকিংহাম প্যালেসে সোমবার এক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে সেই সময়ের প্রবীণদের সম্মান জানানো হয়।

৯৯ বছর বয়সী রয়েল এয়ার ফোর্সের প্রবীণ সদস্য ডেনিস বিশপ বলেন, ‘যাঁরা ফিরতে পারেননি, তাঁদের স্মরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।’

সকাল থেকেই শত শত মানুষ প্যালেসের সামনে জড়ো হন, কেউ কেউ চেয়ারে, কেউ রুগ বিছিয়ে অপেক্ষা করেন।

৭৬ বছর বয়সী প্যাট্রিক বিউকন বলেন, ‘এটা খুবই আবেগময় মুহূর্ত। আশি বছরের শান্তি, আমরা তাঁদের ঋণী।’

জাতীয় স্মরণ ও রাজকীয় উপস্থিতি

স্মরণ সপ্তাহজুড়ে সারা দেশে শত শত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে—পুরোনো দিনের পোশাকে উৎসব, পিকনিক, প্রদর্শনী ও আঞ্চলিক পার্টি। ঐতিহাসিক যুদ্ধজাহাজ এইচএমএস বেলফাস্টেও এক বিশেষ পার্টির আয়োজন হয়।

মঙ্গলবার রানি ক্যামিলা লন্ডনের টাওয়ারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নিহতদের স্মরণে স্থাপিত প্রায় ৩০ হাজার লাল সিরামিক পপির এক শিল্প ইনস্টলেশন পরিদর্শন করবেন।

বৃহস্পতিবার দুই মিনিটের জাতীয় নীরবতা এবং ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রাজা চার্লসের উপস্থিতিতে স্মরণসেবা ও কনসার্টের মাধ্যমে অনুষ্ঠানমালার পরিসমাপ্তি ঘটবে। ক্যানসার চিকিৎসাধীন চার্লস এ আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন।

এই আয়োজন থেকে যেন রাজপরিবারের কোনো বিষয় দৃষ্টিভঙ্গি সরিয়ে না নেয়—এমন প্রত্যাশাও জানিয়েছে রাজপরিবার, বিশেষত প্রিন্স হ্যারির সাম্প্রতিক বিতর্কিত সাক্ষাৎকারের প্রেক্ষিতে।

এ উপলক্ষে দেশের সব পাব (বার) দু ঘণ্টা বেশি খোলা রাখার অনুমতি পেয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: