ঢাকা | মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

ইসরাইলি যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ সরবরাহে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা নিয়ে রায় দেবেন বিচারকরা

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০২৫ ০০:৩৯

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০২৫ ০০:৩৯

ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংগঠন আল-হাকের দায়ের করা এক আইনি চ্যালেঞ্জের ভিত্তিতে ব্রিটিশ বিচারকরা সোমবার রায় দেবেন- যুক্তরাজ্য ইসরাইলকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ সরবরাহ করতে পারবে কি না।


ইসরাইল গাজায় ভয়াবহ বোমা হামলায় এফ-৩৫ জেট ব্যবহার করেছে। এ সংঘাতে উভয় পক্ষই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের মুখে রয়েছে। হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নিহতদের অধিকাংশই ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক।

মানবিক আইনের লঙ্ঘনের ঝুঁকি রয়েছে মর্মে সিদ্ধান্তে পৌঁছে ব্রিটিশ সরকার কিছু সামরিক রপ্তানি লাইসেন্স স্থগিত করলেও লকহিড মার্টিনের তৈরি এফ-৩৫ স্টিলথ জেটের নির্দিষ্ট কিছু অংশের ক্ষেত্রে তারা ব্যতিক্রম রেখেছে।

ব্রিটেনের হাই কোর্টে দাখিল করা এক মামলায় মানবাধিকার সংগঠন আল-হাক বলেছে, এই ‘কার্ভ আউট’ বা ব্যতিক্রম অবৈধ। তাদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক আইনের বিধান সরকার ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছে- যা সরকার অস্বীকার করেছে।

যুক্তরাজ্য একটি আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা কর্মসূচির অংশ, যা এফ-৩৫ তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণে ভূমিকা রাখে।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি বলেন, রপ্তানি স্থগিত হলে ‘পুরো এফ-৩৫ কর্মসূচি’ই প্রভাবিত হবে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তায় ‘গভীর প্রভাব’ পড়বে।

লন্ডনের আদালত গ্রিনিচ মান সময় সকাল ০৯:৩০টায় রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অক্সফামসহ একাধিক সংস্থার সমর্থন পাওয়া আল-হাক আদালতের কাছে যুক্তরাজ্য-উৎপাদিত যন্ত্রাংশ সরবরাহ বন্ধে নির্দেশনা চেয়েছে।

আল-হাকের আইনজীবীরা বলেন, ব্রিটিশ সরকার জানত যে এফ-৩৫ যন্ত্রাংশ ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনে ব্যবহার করতে পারে- এমন ‘স্পষ্ট ঝুঁকি’ ছিল।

তবে সরকারের পক্ষে আইনজীবী জেমস ইডি বলেন, যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য বিভাগ আইনসম্মতভাবে কাজ করেছে।

তিনি আরও বলেন, ইসরাইলের কর্মকাণ্ডের আইনি বৈধতা নির্ধারণ আদালতের এখতিয়ার নয় এবং এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ‘বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র’ ইসরাইলের সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্কের ওপর ‘নেতিবাচক প্রভাব’ ফেলতে পারে।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ক্ষমতায় আসা লেবার সরকার আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের আলোকে ইসরাইলের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে ৩৫০টি সামরিক রপ্তানি লাইসেন্সের মধ্যে প্রায় ৩০টি স্থগিত করেছিল।

তবে এই আংশিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় এফ-৩৫ এর জন্য যুক্তরাজ্য-নির্মিত যন্ত্রাংশ, যেমন- জ্বালানি রিফুয়েলিং প্রোব, লেজার টার্গেটিং সিস্টেম, টায়ার এবং ইজেক্টর সিট ছিল না বলে জানায় অক্সফাম।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিলি এর আগে বলেছিলেন, এফ-৩৫ রপ্তানি লাইসেন্স স্থগিত করা হলে ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কাছে যুক্তরাজ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন হবে’। তবে আল-হাকের আইনজীবীরা একে ‘ফাঁকফোকর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক এনজিও ক্যাম্পেইন এগেইনস্ট আর্মস ট্রেড বলেছে, সরকার রপ্তানি স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার পর ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে একক রপ্তানি লাইসেন্সের মাধ্যমে ইসরাইলকে ১২৭.৬ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ১৭০ মিলিয়ন ডলার) মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে- যা ২০২০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত পুরো সময়ের সম্মিলিত রপ্তানির চেয়েও বেশি।

সংস্থাটি জানায়, এসব লাইসেন্সের অধিকাংশই ছিল সামরিক রাডার, যন্ত্রাংশ, সফটওয়্যার ও টার্গেটিং সরঞ্জামের জন্য।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: