জাতীয় ডেস্ক | বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় ভেন্টিলেশনে আছেন। দেশি–বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সর্বশেষ চিকিৎসা আপডেটে জানা গেছে, তাঁর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া, রক্তে অক্সিজেন কমে যাওয়া এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড বেড়ে যাওয়ায় ‘ইলেক্টিভ ভেন্টিলেটর সাপোর্ট’-এ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুর ১টার চিকিৎসা আপডেটের বিবৃতিতে এ তথ্য জানান মেডিকেল বোর্ডের সদস্য এভারকেয়ার হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. শাহাবউদ্দিন তালুকদার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠান।
অবস্থার অবনতি: একাধিক জটিলতা
মেডিকেল বোর্ডের তথ্যে জানানো হয়:
- শ্বাসকষ্ট ও অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে প্রথমে হাই-ফ্লো নাজাল ক্যানোলা ও বাইপ্যাপ ব্যবহার করা হয়। উন্নতি না হওয়ায় ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়।
- কিডনির কার্যক্ষমতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুরু হয়েছে ডায়ালাইসিস, যা এখনো নিয়মিত দিতে হচ্ছে।
- পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও ডিআইসি জটিলতার কারণে রক্ত ও বিভিন্ন রক্ত উপাদান ট্রান্সফিউশন দেওয়া হচ্ছে।
- ইকোকার্ডিওগ্রামে অ্যাওর্টিক ভালভের সমস্যা দেখা দেওয়ায় ‘টিইই’ পরীক্ষায় ইনফেকটিভ অ্যানডোকার্ডাইটিস শনাক্ত হয়।
- ২৭ নভেম্বর ধরা পড়ে অ্যাকিউট প্যানক্রিয়েটাইটিস, যার চিকিৎসা চলছে।
- শরীরে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাল সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ায় দেওয়া হচ্ছে শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল চিকিৎসা।
দেশি–বিদেশি বিশেষজ্ঞ টিম প্রতিদিন তাঁর শারীরিক অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
মেডিকেল বোর্ডের অনুরোধ
চিকিৎসকরা গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন—
যাচাইবিহীন খবর ছড়ানো থেকে বিরত থাকা, মেডিকেল বোর্ডকে বিশ্বাস করা এবং রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সম্মান করা।
দীর্ঘদিনের জটিলতা
লিভার, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিলতায় ভুগছেন খালেদা জিয়া। বাসায় অবস্থানকালে শ্বাসকষ্ট ও জ্বর বেড়ে যাওয়ায় গত ২৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাঁর একাধিক অঙ্গের তীব্র অবনতি ধরা পড়ে। পরে তাঁকে কেবিন থেকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: