বিশেষ প্রতিনিধি অধিকার পত্র ডটকম ঢাকা ২১ ডিসেম্বর ২৫
ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা–গোমতী সেতুর টোল আদায়ে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার–সংক্রান্ত মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ আদেশ দেন।
👥 যাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন—
- সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু
- সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ
- সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন
- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
- সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
- সাবেক প্রতিমন্ত্রী (অর্থ ও পরিকল্পনা) এম এ মান্নান
- সাবেক সচিব এম এ এন ছিদ্দিক
- সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফারুক জলিল
- সাবেক উপসচিব মোহাম্মদ শফিকুল করিম
- সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ফিরোজ ইকবাল ও ইবনে আলম হাসান
- সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আফতাব হোসেন খান ও আব্দুস সালাম
- সিএনএস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনীর উজ জামান চৌধুরী
- পরিচালক সেলিনা চৌধুরী ও ইকরাম ইকবাল
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা তানজীর আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
⚖️ দুদকের আবেদনে যা বলা হয়েছে
দুদকের সহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তানজিল হাসান আদালতে আবেদনে বলেন,
একক উৎসভিত্তিক দরপত্রের মাধ্যমে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস) লিমিটেডকে ৫ বছরের জন্য মেঘনা–গোমতী সেতুর টোল আদায়ের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটি ১৭.৭৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ (ভ্যাট ও আয়কর ব্যতীত) হারে বিল তুলে নেয়।
এই চুক্তির আওতায় সিএনএস লিমিটেড ৪৮৯ কোটি ৪৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বিল গ্রহণ করে, যার ফলে সরকারের ৩০৯ কোটি ৪২ লাখ ৪৫ হাজার ৮৯০ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
দুদক জানায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে এই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা দেশত্যাগ করলে তদন্ত ব্যাহত ও গুরুত্বপূর্ণ আলামত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকায় দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জরুরি ছিল।
📑 মামলার পটভূমি
গত ১২ অক্টোবর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা–১–এ শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়—
- ২০১৬ সালে পূর্বের দরপত্র ইচ্ছাকৃতভাবে বাতিল করে
- একক উৎসভিত্তিক দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে
- শুধুমাত্র সিএনএস লিমিটেডের সঙ্গে আলোচনা করে টোল আদায়ের চুক্তি করা হয়
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে, ২০১০–২০১৫ মেয়াদে একই সেতুর টোল আদায় করতে যেখানে ব্যয় হয়েছিল মাত্র ১৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, সেখানে সিএনএস লিমিটেডকে দেওয়া চুক্তিতে ব্যয় দেখানো হয় কয়েক গুণ বেশি।
দুদকের মতে, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তা, সিএনএস লিমিটেডের পরিচালক এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সদস্যরা যোগসাজশে এই অনিয়ম সংঘটিত করেছেন।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: