লোকেশন ও তারিখ: বাংলাদেশ | ২৩ নভেম্বর ২০২৫
বাউল শিল্পী আবুল সরকারের একটি গান ও বক্তব্য সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। গুরুতর অভিযোগ হলো—
তিনি মহান আল্লাহ, পবিত্র কুরআন ও ইসলামের মৌল বিশ্বাস নিয়ে তাচ্ছিল্যপূর্ণ ও অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করেছেন।
এটি কোনো দার্শনিক আলাপ নয়, এটি কোনো শৈল্পিক রূপকও নয়—এটি সরাসরি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ, যা বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে স্পষ্ট অপরাধ। প্রকাশ্য ফাঁসি।উপযুক্ত
প্রযোজ্য আইন ও নির্দিষ্ট ধারা (আইন জানা জরুরি)
এই ঘটনায় “মতপ্রকাশের স্বাধীনতা” বলে দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। প্রযোজ্য আইনগুলো হলো—
বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০
- ধারা ২৯৫এ:
কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃত ও বিদ্বেষপূর্ণ উদ্দেশ্যে কোনো ধর্ম বা ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করে এবং তাতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে—তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
শাস্তি: কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয়ই।
সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩
- ডিজিটাল বা অনলাইন মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাতকারী কনটেন্ট প্রচার করলে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।
- গান, ভিডিও বা বক্তব্য যদি অনলাইনে ছড়ানো হয়—এই আইন সরাসরি প্রযোজ্য।
অতএব, বিষয়টি ‘সংস্কৃতি’ বা ‘গান’ দিয়ে আড়াল করার কোনো আইনি সুযোগ নেই।
রাষ্ট্র যদি কঠোর না হয়, তাহলে অপরাধ উৎসাহিত হবে
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো—এ ধরনের ঘটনায় অতীতে দায়সারা গ্রেপ্তার, নামমাত্র তদন্ত বা নীরব সমঝোতা দেখা গেছে।
এটা হলে এর ফল হবে ভয়াবহ—
- অন্যরাও সাহস পাবে ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে কটূক্তি করতে
- সামাজিক উত্তেজনা বাড়বে
- ধর্মীয় সম্প্রীতি ভেঙে পড়বে
রাষ্ট্রকে মনে রাখতে হবে—
ধর্মীয় অবমাননায় শিথিলতা মানেই ভবিষ্যতের অস্থিরতার বীজ বপন।
আবুল সরকারের শিক্ষাগত যোগ্যতা: তথ্যের সীমা ও বাস্তবতা
এই সম্পাদকীয় স্পষ্টভাবে জানাতে চায়—
আবুল সরকারের আনুষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে কোনো নির্ভরযোগ্য, নথিভুক্ত বা রাষ্ট্রীয়ভাবে যাচাইকৃত তথ্য প্রকাশ্যে পাওয়া যায় না।
সাধারণভাবে তিনি নিজেকে লোকসংগীত ও বাউল ধারার শিল্পী হিসেবে পরিচয় দেন। কিন্তু ধর্মতত্ত্ব, কুরআনিক ব্যাখ্যা বা ইসলামী জ্ঞানের কোনো স্বীকৃত শিক্ষা বা প্রশিক্ষণের তথ্য নেই।
এখানেই প্রশ্ন ওঠে—
যে ব্যক্তি ইসলামী জ্ঞানে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষিত নন,
যিনি ধর্মীয় ব্যাখ্যার যোগ্যতা প্রমাণ করেননি,
তিনি কোন কর্তৃত্বে আল্লাহ ও কুরআন নিয়ে তাচ্ছিল্য করেন?
তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের ভণ্ডামি ও দায়িত্বহীন অবস্থান
সবচেয়ে চিন্তার বিষয়—কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক মুখ নির্বিকারভাবে এই বক্তব্যকে সমর্থন করছেন বা হালকা করে দেখছেন।
প্রশ্ন হলো— আপনারা কি আদৌ বোঝেন কোটি মুসলমানের বিশ্বাসে কী বলা হয়েছে?
নাকি “মুক্তচিন্তা” নামক মুখোশের আড়ালে দায়িত্বহীনতার চর্চা করছেন?
যদি সত্যিই বিবেক থাকত, তবে ধর্মীয় অবমাননায় অভিযুক্ত বক্তব্যের পক্ষে দাঁড়িয়ে নিজেদেরই লজ্জা হতো।
সহিংসতা নয়—কিন্তু ন্যায়বিচারে একচুল ছাড় নয়
এই সম্পাদকীয় কোনো রাস্তার বিচার বা সহিংসতার পক্ষে নয়।
কিন্তু এটাও স্পষ্টভাবে বলতে হবে—
✅ এই ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই
✅ প্রয়োজনে ডিজিটাল ফরেনসিক বিশ্লেষণ চাই
✅ দোষ প্রমাণিত হলে আইনের সর্বোচ্চ কঠোর প্রয়োগ চাই
এর বাইরে যে কোনো আপস মানেই জাতিকে ভবিষ্যতের আরও বড় সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়া।
আবুল সরকার ইস্যু এখন শুধু একজন শিল্পীর বক্তব্য নয়—
এটি ধর্মীয় বিশ্বাসের মর্যাদা, আইনের শাসন এবং রাষ্ট্রের দৃঢ়তার প্রশ্ন।
ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ প্রমাণিত
কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতেই হবে
অন্যথায় ইতিহাস ক্ষমা করবে না।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: